হযরত মা ফাতেমা (রাঃ)-এর জীবনী বই - Part 15

হযরত মা ফাতেমা (রাঃ)-এর জীবনী বই - Part 15

নিরহংকারিতা ও নম্রতা

এ কথা সর্বজন বিদিত যে যারা আল্লাহ তায়ালার প্রিয়জন হিসেবে অভিহিত হয়েছেন তারা প্রত্যেকেই জীবন চলার প্রতিটি পদেপদে বিনয় ও নম্রতার মহৎগুণটি প্রতিফলিত করেছেন। কোন সময়ই নিজের মধ্যেকার গুণ গরিমার জন্য অহংকার করে নিজেকে জাহের করতে চায়নি। তদ্রুট নবী দুলালী হযরত ফাতেমাতুজ জোহুরা (রাঃ) নবী কন্যা ও হযরত আলী (রাঃ)-এর স্ত্রী ও ইমাম হাসান হোসেনের মা হিসেবে আত্ম গরিমা করে নিজেকে বড় করে দেখেনি । 

বরং সাধারন নারী হিসেবেই সকলের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে চলতেন। অবশ্য তিনি ইচ্ছা করলে বর্তমান যুগের মানব সন্তানের মত নিজেকে সমসাময়িক রমনীগণ হতে স্বতন্ত্র বলে ভাবতে পারতেন। কিন্তু নারী কুলের শিরমনি খাতুনে জান্নাত হযরত ফাতেমা (রাঃ) ছিলেন সম্পূর্ণ আলাদা; তিনি বিনয় ও নম্রতার দ্বারা ছোট বড় সকলের নিকট আপন জন হিসেবে গৃহীত হয়েছিলেন। 

তার কথা ও কাজে অহংকারের লেশ মাত্র ছিলনা। তিনি যে নবী কন্যা সকলের শীর্ষে তার স্থান এমনি কথা তার হৃদয়ে কোন সময়ই ভেসে উঠেনি। বরং তার হৃদয়ের মধ্যে সর্বদা একথাই লুকোচুরি করত যে আমি নবী কন্যা আমার দায়িত্ব কর্তব্য রয়েছে অনেক। কিন্তু আমার দ্বারা তা পালিত হচ্ছে না, ভয় হচ্ছে, কাল কিয়ামতের ময়দানে আল্লাহর কাছে কি জবাব দিব। 

অথচ নবী দুলালী নবী কন্যা হিসেবে সত্য ধর্ম ইসলামের বাণী প্রচারের দায়িত্ব কর্তব্য পালনে মোটে কার্পন্য করেনি। তারপরও সর্বদা দায়িত্ব নিয়ে চিন্তা করতেন। পরিশেষে একথা নিশ্চিতভাবে বলা যেতে পারে যে হযরত ফাতেমা (রাঃ)-এর জীবনে মহৎ গুণাবলীর মধ্যে বিশেষ গুণই ছিল বিনয় ও নম্রতা, আত্ম গরিমা কোন ক্ষেত্রেই স্থান পেতনা ।

স্বামীর সেবা

নবী দুলালী হযরত ফাতেমাতুজ জহুরা (রাঃ) আশেকে নবী হযরত আলী (রাঃ)-এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর স্বামী গৃহে আসর বিদায় মুহুর্তে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) যে উপদেশটি দিয়েছিলেন তা মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত অক্ষরে অক্ষরে পালন করে ছিলেন। নবী মুহাম্মদ (সাঃ) আদরের কন্যা হযরত ফাতেমা (রাঃ)-কে পিতৃগৃহ হতে বিদায়ের সময় হযরত আলীর সামনেই বলেছিলেন “হে ফাতেমা, দাম্পত্য জীবনে প্রতি মুহূর্তেই স্বামীকে সম্মান করবে ও শক্তি সামর্থ অনুযায়ী তাকে ভালবাসবে। 

কেননা স্বামীর খুশীতে আল্লাহ খুশী। যার কারণেই নবী দুলালী দাম্পত্য জীবনে স্বামীর সেবাকে ইহ কালীন ও পর কালীন মুক্তির মূলচাবি কাঠি বলে মনে করতেন। ইতোপূর্বে অনেক স্থানেই হযরত ফাতেমা (রাঃ)-এর স্বামী সেবার অমর কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। যে ঘোষণা বিশ্বের সকল মুসলিম নারীদের জন্য পথনির্দেশীকা হয়ে থাকবে। 

নবী দুলালী হযরত ফাতেমাতুজ জোহরা যতদিন দুনিয়ায় বেঁচে ছিলেন স্বামীর সেবা ও আল্লাহ তায়ালার ইবাদত বন্দেগীর মধ্যে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। প্রিয় পাঠক পাঠিকাগণ আমাদের সমাজে যদি নবী দুলালী হযরত ফাতেমা (রাঃ)-এর মত স্বামী ভক্ত, স্বামী সেবা, গুণগুলো বিরাজ করত করত তাহলে প্রত্যেকটি মুসলিম পরিবারই শান্তির নিকেতন হয়ে যেত। 

স্বামীর স্ত্রী উভয়ের মধ্যে মধুর সম্পর্ক স্থাপিত হত। তাই আসুন আমারা সকলেই আল্লাহ ও রাসূলের সন্তুষ্টি অর্জনে নিমিত্বে নবী দুলালী হযরত ফাতেমাতুজ জোহরার (রাঃ) আদর্শে জীবন গঠন করি । কষ্ট ও ত্যাগ এ কথা সর্বজন বিদিত যে সুখ দুঃখের মধ্যে দিয়েই মানুষের জীবন অতিবাহিত হয়। কার জীবনে সুখ নামক পাখটি হাতের নাগালে আসেনা, আর কার জীবনে সুখের পাখিটি হাতের গণ্ডির মধ্যে উড়ে বেড়ায়। 

তাই এ কথা নিশ্চিত সত্য যে প্রত্যেকের জীবনে কম বেশি কষ্ট তাকেই। কিন্তু যার পার্থিব জীবনের সুখ শান্তিকে তুচ্ছ মনে করে পর কালীন সুখকে স্থায়ী সুখ মনের করে তাদের জীবন কত ঘাত প্রতিঘাত ও কষ্টের মধ্যে অতিবাহিত হয় তা লিখনির মাধ্যমে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। যার জলন্ত প্রমাণ হল খাতুনে জান্নাত হযরত ফাতেমাতুজ জোহরা (রাঃ)। 

সুখের ভবন স্বামী গৃহে এসে কত যে কষ্ট ও ত্যাগ করেছে তা বলে শেষ করা যাবে না। তার জীবন দুঃখ কষ্ট ত্যাগ অভাব আনাটনের মধ্যেই অতিবাহিত হয়েছে জন্মের পর হতে দুঃখ কষ্টের অগ্রযাত্রা শুরু হলেও স্বামীর গৃহে এসে ও সুখ করতে পারেনি। বরং স্বামী গৃহে অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে কষ্টের সাথে সংগ্রাম করে দিন কাটাতে হয়েছে। শত কষ্ট অভাব অনাটনের মধ্যে দিয়ে দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত হলেও পলকের তরেও তার চেহারা খানি মলিন হয়নি। 

কোন সময়ই স্বামী গৃহের দুঃখ কষ্টের কথা পিতার নিকট, স্বামীর নিকট মুখ খুলে বলেনি, বরং সকল কষ্টই নিরবে সহ্য করে নিয়েছেন । এমন কি নামাযান্তে ও প্রার্থনার মাধ্যমে দুঃখ কষ্টের কথা বর্ণনা করে আল্লাহ তায়ালার নিকট কোন অভিযোগ পেশ করেনি। প্রিয় পাঠক পাঠিকাগণ নবী কন্য হযরত ফাতিমার (রাঃ) কষ্ট সাহিষ্ণুতা কথা ইতি পূর্বে বহু স্থানেই আলোচিত হয়েছে। 

লজ্জা সম্ভ্রম

লজ্জা হল মানুষের ঈমানের অঙ্গ। প্রিয় নবী (সাঃ)-এর পবিত্র মুখের পবিত্র বাণীটি নবী দুলালী হযরত ফাতেমাতুজ জোহরা তার জীবনের প্রতিটি পদে সত্যিকার ভাবে গ্রহণ করে রাসুলের আদর্শে জীবন গঠন করতে আপ্রান চেষ্টা করতেন। এ কথা সর্বজন বিদিত যে লজ্জা নারীর ভূষণ, তবে এ প্রবাদ বাক্যেটি মনে হয় নবী দুলালী হযরত ফাতেমার (রাঃ) জীবনেই সবচেয়ে বেশি প্রতি ফলিত হয়েছিল । 

তবে বর্তমান যুগের আধুনিক নারীগণ এ সত্য সুন্দর বাক্যটিকে অনেকেই ইচ্ছা করে ত্যাগ করে খোলা মেলা চলাফেলা কে ফ্যাশনের মধ্যে গণ্য করেন। কিন্তু আধুনিক নারীগণের উচিত সর্ব ক্ষেত্রেই আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের নিমিতে নবী কন্যা ফাতেমার মত লজ্জাশীল হওয়া। তাহলেই তাদের সর্বক্ষেত্রে মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। 

আলোচ্য বর্ণনায় নবী দুলালী হযরত ফাতেমা (রাঃ)-এর জীবনের দু'একটি লজ্জার কাহিনী তুলে ধরব, যাতে করে বর্তমান যুগের আধুনিক নারীগণ তাদের ভ্রান্ত স্বভাব পরিত্যাগ করে খোদায়ী জীবন যাপনে নিজেদেরকে উজাড় করে দেবে। আশা করি তাহলেই আমার নবী দুলালী ফাতিমা (রাঃ)-এর পবিত্র জীবনীখানা লেখা স্বার্থক ও সফল হবে। এবং রাত জাগা পরিশ্রম সার্থক হয়েছে বলে নিশ্চিত মনে বিশ্বাস করব। 

কোন এক বর্ণনায় প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন কোন এক সময় প্রিয় নবী (সাঃ) তার সাহাবাগণকে জিজ্ঞাস করলেন তোমাদের মধ্যে কেহ কি বলতে পার যে স্ত্রী লোকের সর্বোত্তম বস্তু কোন জিনিস? উপস্থিত সাহাবীগণের কেহই প্রিয় নবী (সাঃ)-এর প্রশ্নের সঠিক জবাব দেিত পারেনি, ঐ সভায় শেরে খোদা হযরত আলী (রাঃ) উপস্থিত ছিলেন। তিনি তার গৃহে এসে সর্ব প্রথম ফাতেমা (রাঃ)-এর কাছে প্রিয় নবী (সাঃ) এ কথাটি প্রকাশ করলেন। 

তখন ফাতেমা (রাঃ) বললেন আপনি কেন একথা বলেনি যে “লজ্জা বশতঃ স্ত্রী লোকের ভিন্ন পুরুষ কে না দেখা এবং নিজেকে কোন ভিন্ন পুরুষকে দেখতে না দেয়া। ইহাই হল স্ত্রীলোকের জন্য সর্বোত্তম বস্তু।” হযরত ফাতেমা (রাঃ)-এর মুখ হতে এহেন জবাব শুনে হযরত আলী (রাঃ) প্রিয় নবী (সাঃ)-এর দরবারে উক্ত জবাবটি দিলেন। 

হযরত আলীর (রাঃ) মুখে এহেন জবাব শুনে প্রিয় নবী (সাঃ) জিজ্ঞাস করলেন তুমি এ জবাব কোথা হতে শিখেছো তখন হযরত আলী (রাঃ) বললেন আমি ইহা হযরত ফাতেমা (রাঃ)-এর নিকট হতে শুনেছি। প্রিয় নবী (সাঃ) একথা শুনা মাত্রই অত্যাধিক খুশি হয়ে বললেন আমার কলিজার টুকরা হযরত ফাতেমা (রাঃ) আমার শরীরের অংশ বলেই তার দ্বারা সঠিক জবাব দেওয়া সম্ভব হয়েছে। 

অন্য এক বর্ণনা হতে জানা যায়, প্রিয় নবী (সাঃ) কোন এক সময় তার কলিজার টুকরা হযরত ফাতেমার (রাঃ)-এর জন্য একটি অল্প বয়স্ক চাকর নিয়ে তার গৃহে হাজির হলেন। ঐ মুহুর্তে হযরত ফাতেমার শরীরে এমন এক খানা খাট কাপড় ছিল যে যা দ্বারা মাথা ঢাকলে পাও উন্মুত হয়ে যেত আবার পাঁ ঢাকলে মাথা উন্মুক্ত হয়ে যেত। 

কিন্তু নবীর (সাঃ) আগমনে হযরত ফাতেমা (রাঃ) ঐ কাপড় খানা দ্বারা সর্বাঙ্গ ঢাকবার ব্যর্থ চেষ্টা করলেন তখন প্রিয় নবী মেয়ের এহেন দৃশ্য দেখে বললেন “মা” তুমি ওমনি করতেছ কেন তোমার গৃহে তোমার পিতা ও একটি নাবালক ছেলে ছাড়া আর কেহ উপস্থিত নেই। অন্য এক হাদীসের বর্ণনায় পাওয়া যায় কোন এক সময় প্রিয় নবী (সাঃ)-এর দরবারে হযরত ফাতেমাতুজ জোহুরা (রাঃ) উপবিষ্ট ছিলেন। 

এমনি সময় হঠাৎ সেখানে কোন এক বিশেষ কাজে আবদুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতুম নামক জনৈক সাহাবী প্রবেশ করলেন। উ্যেমমাকতুম আসা মাত্রই নবী দুলালী হযরত ফাতেমা (রাঃ) অত্যন্ত ব্যস্ত হয়ে সেখান হতে অন্যত্র চলে গেলেন। আবদুলাহ চলে যাবার পরে তথায় হযরত ফাতেমা (রাঃ) উপস্থিত হলেন। তখন প্রিয় নবী (সাঃ) ফাতেমাকে লক্ষ্য করে বললেন অন্ধ লোকটি আগমনের কারণে তোমার অন্যত্র যাওয়ার কোন প্রয়োজন ছিলনা। 

প্রিয় নবী (সাঃ)-এর জবাবে ফাতেমা বললেন হে নবী তিনি অন্ধ বলে আমাকে দেখতে পায়না অথচ আমিতো অন্ধ নহি। আমি অবশ্যই তাকে দেখতে পাইতেছি। নবী দুলালী হযরত ফাতেমা (রাঃ) মৃত্যু রোগে আক্রান্ত হয়ে যখন নিশ্চিত ধারনা করতে পারলেন যে তার মৃত্যু খুবই কাছে। তখন তার মনের মধ্যে কেবল একটি চিন্তাই দোলা খেতেছিল, তিনি মৃত্যুর পাশ্বাপাশি একথাও ভাবতেন তার মৃত্যুর পরে তার মৃত লাশ যেন কত মানুষে দেখে? 

অবশ্য তিনি মৃত্যুর পূর্বে পরিবারের সকলকে বলে দিয়েছেন আমার মৃত্যুর পরে আমার লাশ যেন রাতের অন্ধকারে কবরে রাখা হয় এবং আমাকে একমাত্র খলিফা হযরত আবুবকর (রাঃ)-এর বৃদ্ধা স্ত্রী আসমা ছাড়া অন্য কেহ গোসল না করায়। আর আমাকে গোসল দেওয়ার সময় কেউই যেন কাছে না থাকে। প্রিয় পাঠক পাঠিকাগণ লজ্জাবতী ছিলেন কতটুকু একটু ভেবে দেখুন নবী দুলালী হযরত
ফাতেমা।

জীবিত কালের কথা তো চিন্তাই করা যায় না। দুনিয়া থেকে চলে যাবার পরে তার লাশ লোকজনে দেখে ফেলে কিনা এ চিন্তায় দিন রাত হতাশার মধ্যে কেটে দিয়েছে। তবে একথা সর্বজন সত্য কথা যে যেমনিভাবে জীবন যাপনের জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে দুহাত তুলে প্রার্থনা করে আল্লাহ তায়ালাও তার মনের ঐ কান্তিক কামনা কবুল করে নিয়ে সেভাবেই জীবন যাপনের ব্যবস্থা করে দেন। 

তদ্রুপই নবী দুলালী হযরত ফাতেমা (রাঃ) দুনিয়ার জীবনে ও তার পরের জীবনে যেমনিভাবে নিষ্পাপ নিখুত থাকতে চেয়েছেন আল্লাহ তায়ালা তেমনি ভাবেই তার মনের মাকছুদ পুরা করেন। হাদীস শরীফের এক বর্ণনা থেকে জানা যায় হাশরের কঠিন মসীবতের দিন এ লজ্জার প্রতিমা নবী কন্যা কলিজার টুকরা হযরত ফাতেমা (রাঃ) যখন পুলছিসার পার হয়ে চির শান্তিময় বেহেশতের দিকে রওয়ানা করবেন তখন বিশ্বপ্রভু আল্লাহ তায়ালার বিশেষ নির্দেশে একজন ফেরেশতা আওয়াজ দিয়ে বলতে থাকবে তোমরা সকলেই এখন অবনত হয়ে চক্ষু মুদিত কর। 

কেননা এই মুহূর্তে নবীয়ে দোজাহান হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর আদরের কন্যা খাতুনে জান্নাত হযরত ফাতেমা (রাঃ) পুলছিরাত অতিক্রম করে চির শান্তিময় বেহেশতের দিকে যাচ্ছেন। প্রিয় পাঠক পাঠিকাগণ এখানে উল্লেখ্য বিষয় হল সাইয়্যেদুল মুরসালীন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর প্রতি নর্দার আয়াত নাজিল হতেই নবী দুলালী হযরত ফাতেমাতুজ জোহরা (রাঃ) এমনিভাবে লজ্জা সম্ভম রক্ষা করে জীবন যাপন করতেন। 

অন্য এক বর্ণনা থেকে এরূপ একটি ঘটনা শুনা যায় যে তিনি দুনিয়া হতে বিদায় নেয়ার পূর্বে দিন রাত কেবল এ চিন্তায় বিভোর থাকতেন যে মৃত্যুর পরে তাকে যখন কবরের মধ্যে রাখা হবে তখন হয়ত লোক জন এ ধারণা পোষণ করতে পারে যে নবী দুলালী হযরত ফাতেমাতুজ জোহরা (রাঃ) এত খানি লম্বা ছিলেন এবং এতটুকু মোটা ছিলেন। এ ধারনাতীত বিষয় হতে পরিত্রান পাবার জন্য তিনি সর্বদা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে অন্তরের অন্তঃস্থল হতে কান্না ভেজা কণ্ঠে প্রার্থনা করতেন। 

সত্যি আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় হাবীবের (সাঃ) প্রিয় কন্যা হযরত ফাতেমা (রাঃ) হৃদয় গ্রাহী প্রার্থনা কবুল করলেন সত্যি। নবী দুলালী ফাতেমা (রাঃ) আল্লাহর নির্দেশে যেদিন বিদায় নিলেন এদিনই তার প্রতিবেশীদের মধ্যে থেকে আরও সাত জন স্ত্রী লোক দুনিয়া হতে বিদায় নিলেন এবং তাদেরকেও রাত্রি বেলায় নবী দুলালী হযরত ফাতেমা (রাঃ)-এর পার্শ্বেই কবর দেওয়া হল । 

সকাল বেলা বহু দূর দূরান্ত হতে নবী দুলালী হযরত ফাতেমা (রাঃ)-এর কবর যিয়ারত করতে আসল কিন্তু তারা এসে দেখতে পেল একই স্থানে নতুন একটি কবর। কিন্তু কোনটি নবী দুলালী হযরত ফাতেমা (রাঃ)-এর কবর তা কেহই ধারণা করতে পারল না। প্রিয় পাঠক পাঠিকাগণ একটু ভেবে দেখুন আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয়জনদেরকে কিভাবে বিপদ হতে মুক্ত করেন। 

তাই প্রত্যেক মুসলিম নরনারীর উচিত আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির নিমিত্তে সকল কাজ করা তাহলেই আল্লাহ তায়ালা আমাদের ভাল বাসবেন এবং নিয়ত অনুযায়ী কর্মের ফলাফল দিবেন। যার জলন্ত প্রমাণ হল হযরত ফাতেমাতুজ জোহরা (রাঃ) তিনি যে বিপদ হতে রক্ষা চেয়েছিলেন আল্লাহ তায়ালা তাকে সেই বিপদ হতে মুক্তি করে দুনিয়া হাতে নিয়ে গেলেন।